প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪, ১:০৭ PM
সরকারি চাকরিতে কোটার বিরোধিতা করে আজ আবারও আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি আদালতের রায়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করা হলে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। এ দাবিতে তৃতীয় টানা তৃতীয়দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা। এর ফলে ওই এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। যানজট ছড়িয়েছে রাজধানীর অনেক সড়কে।
বুধবার (৩ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে কোটাবিরোধী মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্য হয়ে শাহবাগে মিলিত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকেন। তারা ‘কোটা না মেধা?’ ‘মেধা মেধা, হাইকোর্টের রায় মানি না মানব না', 'কোটা বাতিল করো, বাতিল করো', 'ছাত্রসমাজ গড়বে দেশ, মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ' 'মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই' এমন স্লোগান দিচ্ছেন। গতকালের মতো আজও পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরপর দুই দফা হাতাহাতি হয়েছে বলে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান।
২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। তবে ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়। তার প্রেক্ষিতে নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড পর্যন্ত চাকরির ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা পুরোপুরি বাতিল করে দেয় সরকার। তার আগে এসব পদে চালু থাকা কোটার ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং তাদের নাতি-নাতনিদের জন্য সংরক্ষিত ছিল।
এর বাইরে নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধীদের জন্য এক শতাংশ আসন থাকত। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের এক রিটে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন কোটা পুনর্বহালের আদেশ দেন বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ। রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী জানান, পুরো কোটা বাতিল না করে কেবল নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের কোটা বাতিল করেছিল। এটা অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এখন থেকে এসব গ্রেডে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তাদের সন্তানদের নিয়োগে আর কোনো বাধা নেই। এরপর উচ্চ আদালতের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে শুনানি শেষে আপাতত হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।