শিরোনাম: |
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বাংলাদেশকে মোট ১১ দশমিক ৩৮৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে রাশিয়া। এরই মধ্যে ব্যয় হয়েছে তিন বিলিয়ন ডলার। খরচ করতে বাকি আরও আট বিলিয়ন ডলারের বেশি। এভাবে নানা উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বর্তমানে পাইপলাইনে রয়েছে ৫০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৪ লাখ ২৮ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটের প্রায় সমপরিমাণ অর্থ রয়েছে পাইপলাইনে। এছাড়া উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্র“তি রয়েছে আরও ১৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে কয়েক বছর ধরে বৈদেশিক ঋণ ও পাইপলাইনে থাকা বৈদেশিক অর্থের পরিমাণ বাড়ছে বলে জানায় ইআরডি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সবশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি ও মেগা প্রকল্প নেওয়ার ফলে পাইপলাইনে বড় অঙ্কের টাকা পড়ে আছে বলেও দাবি ইআরডির। পাইপলাইনে বৈদেশিক অর্থ থাকা প্রসঙ্গে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব (অনুবিভাগ প্রধান) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, মেগা প্রকল্প বাড়ার কারণেই মূলত পাইপলাইনে থাকা বৈদেশিক অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। যেমন- রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে ১১ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে খরচ হয়েছে মাত্র তিন বিলিয়ন। বর্তমানে এক প্রকল্পের আওতায় আরও আট বিলিয়ন ডলার পাইপলাইনে আছে। আমাদের ডিপি (উন্নয়ন সহযোগী) কোনো ফ্যাক্ট নয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি বাড়লেই পাইপলাইনে থাকা অর্থ খরচ বাড়বে। পাইপলাইনে থাকা অর্থ অবমুক্ত করতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় কি না জানতে চাইলে মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি হলে আমরা পিডিদের (প্রকল্প পরিচালক) নিয়ে বৈঠক করি। আবার প্রকল্পে টাকা ছাড়ে কোনো সমস্যা হলে পদক্ষেপ নেই। পাইপলাইনে থাকা অর্থ ব্যবহারের জন্য বড় বড় বাজেট নেওয়া হচ্ছে। বাজেট যত বাড়বে ততই পাইপলাইনে থাকা অর্থের খরচ বেশি হবে। স্বাধীনতার পরে বর্তমান সময় পর্যন্ত উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে নানা প্রকল্পে মোট অর্থছাড় হয়েছে ১ হাজার ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ইআরডি জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে পিছিয়ে থাকলেও স্বাধীনতার পর থেকে নানা প্রকল্পে বাংলাদেশে ঋণ দেওয়ার শীর্ষে রয়েছে বিশ্বব্যাংক। যা মোট ঋণের ৩৬ শতাংশ। এর পরই ২৩ শতাংশ ঋণ দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এডিবি। মোট বৈদেশিক ঋণের ১৮ শতাংশ জাপান থেকে, ৮ শতাংশ চীন থেকে, ১ শতাংশ দক্ষিণ কোরিয়া, আইডিবি ১ ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী থেকে ১২ শতাংশ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার এখন প্রায় ৪১১ বিলিয়ন ডলার। মোট জিডিপির ১৬ শতাংশই বৈদেশিক ঋণ, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মোট জিডিপির ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ ঋণ ছিল। এরপর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশে।