রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
 
শিরোনাম:


ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব কোন দিকে মোড় নিচ্ছে?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, ৬:৪২ PM

পহেলগামে হামলার পর থেকে তীব্র বাকযুদ্ধে জড়িয়েছে প্রতিবেশী দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ভারত-পাকিস্তান। একদিকে, হামলাকারী ও হামলার পরিকল্পনাকারীদের কল্পনাতীত সাজা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে, পাকিস্তান প্রত্যেক নাগরিকের মৃত্যুর বদলা নেবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। ইতোমধ্যে দুই দেশই একে-অপরের বিরুদ্ধে নিয়েছে সীমান্ত বন্ধসহ একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই পরিস্থিতি নানা অনিশ্চয়তার জন্ম দিচ্ছে। দুই দেশের দ্বন্দ্ব কোন দিকে যাচ্ছে, তা নিয়েও বিশ্ব রাজনীতিতে উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। ভারত ও পাকিস্তানের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ দেখানো উচিৎ বলেও মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ।
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকবাজদের হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। মূলত পর্যটকদের ওপর এই হামলা চালানো হয়। এই ঘটনার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে উঠেছে।

সীমান্তের একদিকে যেমন ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের’ দাবি জোরালো হয়েছে, তেমনি অন্য প্রান্তে ‘সমুচিত জবাব’ দেওয়ার দৃঢ় সংকল্প নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো ‘উত্তেজনার সবচেয়ে বিপজ্জনক অধ্যায়’ পেরিয়ে গিয়েছে কি না?
এই প্রশ্ন ওঠার কারণ, অতীতে উরি ও পুলওয়ামায় হামলার পর ভারত যে কৌশল অবলম্বন করেছিল। দুই ক্ষেত্রেই ভারত সরকারের নির্দেশে আন্তঃসীমান্ত অভিযান চালানো হয়েছিল। সেই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। পুলওয়ামার ঘটনার পর ভারতের তরফে বালাকোটে বিমান হামলা চালানো হয়। এর প্রতিক্রিয়া স্বরূপ পাকিস্তান পাল্টা পদক্ষেপ নেয়। এই আবহে যখন ভারতীয় বিমানবাহিনীর কমপক্ষে একটা বিমান ধ্বংস এবং ভারতীয় পাইলটকে আটক করে পাকিস্তান, তখন দুই দেশের মধ্যে বড়সড় আকারের সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল।

উল্লেখ্য, পহেলগামে হামলার জন্য এখনও পর্যন্ত ভারত পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ী করেনি, যেমনটা অতীতে দেখা গিয়েছে।
কিন্তু ভারত সরকার সিন্ধু জল বণ্টন চুক্তি স্থগিত, প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করাসহ একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে, যা এই হামলার জন্য ভারত কাকে দায়ী বলে মনে করে সে বিষয়ে একটা স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। পাশাপাশি, ভারত শাসিত কাশ্মীরের অনন্তনাগ পুলিশ এই ঘটনায় সন্দেহভাজন হামলাকারীদের স্কেচ প্রকাশ করেছে। এদের মধ্যে দু'জন পাকিস্তানি নাগরিক রয়েছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে।
তবে প্রমাণের অভাবে প্রথাগত ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতের তরফ থেকে সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে নানারকম জল্পনা-কল্পনা চলছে। রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য সেগুলোকে আরও জোরদার করছে। এর আগে, ভারতের তরফে যে সমস্ত কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, তার প্রেক্ষিতে দুই দেশের মধ্যে এই চলমান সংঘাত আগামী দিনে কোন দিকে মোড় নিতে পারে, তা জানার চেষ্টা করেছে বিবিসি।

বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে হয়েছিল যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার কি আরও একবার আন্তঃসীমান্ত পদক্ষেপের কৌশল গ্রহণ করতে পারে? তা যদি হয়, তাহলে তার জবাবে পাকিস্তানের তরফে প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে?
তবে এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে দেখে নেওয়া যাক ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সেগুলো 'আনইউজুয়াল' বা অস্বাভাবিক কি না।

ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি সিদ্ধান্ত

পহেলগামে হামলার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটা পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে রয়েছে— সিন্ধু জল বণ্টন চুক্তি স্থগিত করা, ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত বন্ধ করা, ভিসা সুবিধা প্রত্যাহার করা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করাসহ একাধিক সিদ্ধান্ত।
ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় সিমলা চুক্তি স্থগিত, সীমান্ত বন্ধ করা, বাণিজ্য স্থগিত, ভারতের ওপর পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পাকিস্তান।

ভারতের মতো পাকিস্তানও প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে ও তাদের সহযোগীদের দেশ ছাড়তে এবং কূটনীতিকদের সংখ্যা সীমিত করতে বলেছে।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি ভারতের তরফে নেওয়া সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে। জানানো হয়েছে, ভারত যদি এই চুক্তি থেকে সরে এসে পাকিস্তানের দিকে জলপ্রবাহ বন্ধ করে বা জল অন্যদিকে চালিত করার চেষ্টা করে, তাহলে তা যুদ্ধের পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। পূর্ণ শক্তি দিয়ে এর জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।

উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালের বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে সিন্ধু জল বণ্টন চুক্তি কিন্তু যুদ্ধ, সংকট ও উত্তেজনা সত্ত্বেও বহাল ছিল।
কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ভারতের তরফে এই চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত একটা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, ‘চাপ সৃষ্টি’ করতে ‘জলের মতো মৌলিক সম্পদ ব্যবহার করতে প্রস্তুত।’ এই সিদ্ধান্তকে ‘বিপজ্জনক পদক্ষেপ’ হিসেবে মনে করছেন কেউ কেউ।

পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বারবার দাবি করেছেন, ভারতের পক্ষ থেকে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। একইসঙ্গে তিনি এও দাবি করেছেন যে তার কাছে এমন ‘তথ্য’ রয়েছে যে ‘আগামী দিনে বালুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় সশস্ত্র কর্মকাণ্ড বাড়াতে ভূমিকা পালন করতে পারে ভারত।’ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন, এমনটা ঘটলে পাকিস্তান তার কড়া জবাব দেবে এবং প্রত্যেক নাগরিকের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেবে।

যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি ইঙ্গিত করছে যে এই সংকট এখন আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান বিবিসিকে জানিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তান মারাত্মক সংকটের দিকে যাচ্ছে। তিনি বলেছেন, ‘পহেলগাম হামলায় বেসামরিক মানুষের মৃত্যু এবং এর জবাবে ভারতের লক্ষণীয় সিদ্ধান্ত, বিশেষত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করা প্রমাণ করে যে পরিস্থিতি আর মধ্য স্তরের উত্তেজনায় সীমিত নেই।’ সাবেক মার্কিন কূটনীতিক ও থিংক ট্যাঙ্ক স্টিমসন সেন্টারের পররাষ্ট্রবিষয়ক বিশেষজ্ঞ এলিজাবেথ থারলকেল্ড বলেন, ‘পহেলগামে হামলার পর সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনা অনেক বেশি। কিন্তু তা কখন এবং কীভাবে হবে সেটা স্পষ্ট নয়।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের যেকোনো হামলায় পাকিস্তান অবশ্যই জবাব দেবে এবং দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে, যেখানে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ দুই দেশের মধ্যে কারও কাছে পরিষ্কার নাও হতে পারে।’ তবে সাম্প্রতিক ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে দুই দেশ যুদ্ধের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে এমন ঘটনা নতুন নয়। গত ২৫ বছরে দেশ ভারত-পাকিস্তান বেশ কয়েকবার একেবারে যুদ্ধের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে।

২০০১ সালে সংসদে হামলার পর ভারত পাকিস্তানি বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সীমান্তে দুই দেশই নিজেদের বাহিনী মোতায়েন করে। একইভাবে ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পর ব্যাপক উত্তেজনার পর সীমান্তে একই চিত্র দেখা গিয়েছিল। এরপর ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় হামলার জবাবে ভারতীয় বিমানবাহিনী বালাকোটে বিমান হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ভারতীয় বিমানকে নিশানা করে ভূপাতিত করে এবং বিমানচালককে আটক করে। এত কিছু সত্ত্বেও, প্রচলিত যুদ্ধ বলতে ঠিক যা বোঝায় তা দেখা যায়নি। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, এবারের পার্থক্য হলো, কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি জলের মতো ‘মৌলিক’ বিষয়টাও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আমির জিয়া বলেন, ‘ভারতের তরফে অতি দ্রুত পদক্ষেপ দেখা গিয়েছে এবং আমি মনে করি তাদের (ভারতের) পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে সেটা দেখার জন্য আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সামরিক পদক্ষেপ নিলে পাকিস্তান যে কড়া জবাব দেবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।’ এই সাংবাদিক বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে একদিকে ভারতীয় নেতৃত্বের উপর জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ তৈরি হচ্ছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো সেখানকার মিডিয়া ও রাজনীতি পাকিস্তানকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। অন্যদিকে ভারতের কর্মকাণ্ডের কড়া জবাব দিতে পাকিস্তানের নেতৃত্বের উপরেও চাপ রয়েছে।’

তার মতে, পাকিস্তান যদি আগামী দুই দিনের মধ্যে বিশ্বশক্তিগুলোর পক্ষ থেকে ভারতের ওপর কূটনৈতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করতে সফল হয়, তাহলে তা (পাকিস্তানের কাছে) সর্বোত্তম বিকল্প হবে। এতে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হওয়া থেকেও রেহাই পাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে, এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র কোনো ভূমিকা পালন করতে পারে কি না? আর এই প্রশ্নের ‘একপ্রকার’ নিরসন করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তার বিশ্বাস ভারত-পাকিস্তান নিজেরাই এই পরিস্থিতির সমাধান খুঁজে বের করতে পারবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘আমি ভারতের খুব কাছের এবং আমি পাকিস্তানেরও খুব কাছের।’
পর্যটকদের নিশানা করে চালানো হামলার নিন্দা করে তিনি বলেছেন, ‘একটা বাজে আক্রমণ (পহেলগামে বন্দুকবাজদের হামলা) হয়েছে।’
দুই দেশের মধ্যে ‘সীমান্তে উত্তেজনা’ দীর্ঘদিনের জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে অনেক উত্তেজনা রয়েছে, কিন্তু এটা বরাবরই ছিল।’

ভারত ও পাকিস্তানের শীর্ষ নেতৃত্ব সমাধান খুঁজে বের করতে পারবে বলে তিনি মনে করেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, "আমি নিশ্চিত যে তারা কোনোভাবে এটার একটা সমাধান খুঁজে করবে। আমি দুই দেশের নেতাকেই চিনি।" তবে ভারত ও পাকিস্তানের ‘সঙ্কটের’ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো কোনো ভূমিকা পালন করতে পারবে না, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই অনুমান করেছিলেন। এলিজাবেথ থারলকেল্ড আগেই বিবিসিকে বলেছিলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সঙ্কট ব্যবস্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র হয়তো কোনো ভূমিকা পালন করতে পারবে না।’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘কারণ, ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক গভীর হচ্ছে এবং পাকিস্তানের ওপর আমেরিকার প্রভাব কমছে।’
এলিজাবেথ থারলকেল্ড আরও বলেন, ‘বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন পররাষ্ট্রনীতির ফ্রন্টে একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র একটা কার্যকর মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে সক্ষম নাও হতে পারে।’

‘অতীত থেকে শিক্ষা’

বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ অবশ্য মনে করেন, অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়ায় দুই দেশের মধ্যে এই সংঘাত ও উত্তেজনা আর বাড়বে না।
সাবেক সিনেটর ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুশাহিদ হুসেন সৈয়দ বলেন, ‘ভারত অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েছে। পুলওয়ামার পরে, যখন সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, তখন পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া খুব শক্তিশালী ছিল, যা কূটনৈতিক ফ্রন্টে ভারতের ক্ষতি করেছিল।’
এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, ‘আমি মনে করি সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকবে ভারত। তারা তাদের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক কার্ড ইতিমধ্যে খেলে ফেলেছে।’

আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ আহমের বিলাল সোফি বিবিসির সঙ্গে আলোচনার সময় আশা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা হয়ত আর বাড়বে না। তিনি বলেছেন, ‘আশা করি, ভারতের ঘোষণাগুলো প্রতীকী থাকবে এবং আগামী বছরগুলোতে প্রকৃতপক্ষে জল বন্ধ হবে না। তবে যদি এমনটা করার চেষ্টা করা হয় তবে তা অবশ্যই প্রথাগত যুদ্ধের দিকে একটা বড় পদক্ষেপ হবে।’ কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপন্সিবল স্টেটক্রাফটের বিশ্লেষক অ্যাডাম ওয়েনস্টেইন বিবিসি উর্দুকে বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে কোনও ধরনের প্রথাগত যুদ্ধ বা পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কার কারণে যুক্তরাষ্ট্র কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে চিন্তিত।’

তবে তিনি বলছেন, ‘কাশ্মীরে হামলা পরিকল্পিত হোক বা না হোক পশ্চিমা সরকারগুলো ভারতকে পুরোপুরি সমর্থন করার আগে (এই হামলায় বিদেশি উপাদানের জড়িত থাকা) প্রমাণ চাইবে। তা সে যতই ভারতের প্রতি পশ্চিমাদের সহানুভূতি থাকুক না কেন।’
তার মতে, এতে পাকিস্তানের অস্তিত্ব হুমকির মুখে না পড়লেও ‘সিন্ধু জল চুক্তি সংক্রান্ত বিরোধকে তা আরও বাড়িয়ে তুলবে।’
ওয়েনস্টেইন বলেছেন, ‘তাদের ভারত বিরোধী বা কাশ্মীর সংক্রান্ত বক্তব্য জাতীয় স্বার্থকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে বা পাকিস্তানকে আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলেছে কি না সেটাও পাকিস্তানি নেতাদের ভাবতে হবে।’

দুই দেশের উত্তেজনা এবং বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘এর ফলে দুই দেশই আবার একটা আবর্তের মধ্যে পড়বে। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে এবং তারপর একসময় পরিস্থিতি আবার আগের মতো হয়ে যাবে।’
তার মতে, এই সমস্ত বিষয় নিয়ে লড়াই করতে গিয়ে দুই দেশই তাদের নিজেদের অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধির মতো বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলা করতে পারবে না।







আরও খবর


 সর্বশেষ সংবাদ

কুমিল্লায় ২৯ লক্ষ টাকার অবৈধ ভারতীয় মদ ও সিগারেট আটক
কুবির ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন
ঝিনাইগাতীর ডাকাবরে একটি সেতুর অভাবে ১৫ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ
ইউটিউব দেখে চিয়া সীড চাষে সফল তরুণ উদ্যোক্তা শিমুল
জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বই পড়ার বিকল্প নেই
আরো খবর ⇒


 সর্বাধিক পঠিত

ভাঙাচোরা সড়কে সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগ
নেপালে ‘বর্ষা সুন্দরী’র চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী
ফরিদপুরের সালথায় আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ্য কর্মীদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান
সিনেমার গানে আগ্রহী মৌসুমী ইকবাল
কুলাউড়ায় সাংবাদিক সিপনের সুস্থতায় দোয়া অনুষ্ঠিত
প্রকাশক: এম এন এইচ বুলু
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মাহফুজুর রহমান রিমন  |   উপদেষ্টা সম্পাদক : রাজু আলীম  
বিএনএস সংবাদ প্রতিদিন লি. এর পক্ষে প্রকাশক এম এন এইচ বুলু কর্তৃক ৪০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বুলু ওশেন টাওয়ার, (১০তলা), বনানী, ঢাকা ১২১৩ থেকে প্রকাশিত ও শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ফোন:০২৯৮২০০১৯-২০ ফ্যাক্স: ০২-৯৮২০০১৬ ই-মেইল: spnewsdesh@gmail.com