প্রকাশ: শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:০২ PM
তাওহীদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে উত্তাল ক্রিকেট পাড়া। ক্রিকেটার ও আম্পায়ার কমিটির চাপে পড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এই সমস্যা সমাধানে এর মাঝেই মোহামেডানের ক্রিকেটার ও আম্পায়ারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। বিসিবি কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন তামিম ইকবাল। প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে নেমে হার্ট অ্যাটাকের পর এদিনই প্রথম সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন টাইগারদের সাবেক এই অধিনায়ক।
বৈঠক শেষে তামিম বলেন, ‘আজকে আমরা যে কারণে সবাই এখানে এক সাথে হয়েছি। যেটা লাস্ট দুই তিন চার মাসের কিছু কিছু ইন্সিডেন্ট ঘটেছে। যেটা নিয়ে প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের মনে একটা প্রশ্ন ছিল তারা হতাশ ছিল। আমি দুইটা তিনটা পয়েন্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারব। প্রথম কথা তাওহীদ হৃদয় ওর সাথে মাঠে একটা ঘটনা হয়। তাকে প্রথমে দুইটা ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেয়। যখন নিষেধাজ্ঞা দেয় তখন কোনো প্লেয়ার বা কেউ এটা নিয়ে কথা বলে নাই। এটা নিয়েও আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি। তার কিছুদিন পরে দেখলাম যে দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো। এটা বিসিবি করেছে, তখন আমরা কোন ধরনের কোনো কথা বলিনি। গতকাল আবার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এটা কোন রুলে কিভাবে করছে আমার কাছে জানা নেই। এটা খুব হাস্যকর এটা কোনভাবেই নিষেধাজ্ঞা হতে পারে না।’ এর আগে, ১২ এপ্রিল ডিপিএলে রাউন্ড রবিন লীগের শেষ ম্যাচে আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকতের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় পড়েন হৃদয়। তার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের তরফে আপিলও করা হয়েছিল। এরপর হৃদয়ের শাস্তি এক ম্যাচে কমিয়ে এনেছিল লিগ কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি পরিচালক ও সিসিডিএমের নতুন কনভেইনর নাজমুল আবেদীন ফাহিম তাওহীদ হৃদয়ের নতুন করে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার কথা নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমার মনে হয় আমরা প্রক্রিয়ার কিছুটা বাইরে চলে গিয়েছিলাম। অভ্যন্তরীণভাবে বাইলজ বদল করে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সেটা নেওয়ার এখতিয়ার এখানে এই কমিটির নেই। আমাদের যেটা করতে হবে আগের যে নিয়ম কানুন ছিল সেটা অনুসরণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেছিলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আগের একটা ঘটনার কারণে যাকে দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, কিন্তু তাকে এক ম্যাচ পরই খেলতে দেওয়া হয়। আমরা তো সেটা ফিরিয়ে আনতে পারব না। আমরা সেটা (অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে হৃদয়ের খেলা) বৈধ ধরে নিচ্ছি। এখন আমরা আগের নিয়মকে বলবৎ করব। সেই অনুযায়ী পরবর্তী ম্যাচে (গাজী গ্রুপের বিপক্ষে) তাওহীদ হৃদয় খেলার সুযোগ পাবে না।
তাই লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে না খেললেও গত রোববার অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে মোহামেডানকে নেতৃত্ব দেন হৃদয়। কিন্তু পরে জানা যায়, মোহামেডানের চাপে পড়ে বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটি হৃদয়কে ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেয়। যে প্রক্রিয়াটি ছিল পুরোপুরি নিয়মবহির্ভূত। কারণ, শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এখতিয়ারই নেই বিসিবির আম্পায়ার্স বিভাগের।
এরপর বিসিবির চাকরি ছাড়ার হুমকি দেন আইসিসির এলিট প্যানেলে বাংলাদেশের একমাত্র আম্পায়ার সৈকত। এমনকি সিসিডিএমের টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক পদ থেকে এনামুল হক মনিও পদত্যাগ করেন। যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে বিসিবি। যার ফলে হৃদয়ের এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কমানোর সেই সিদ্ধান্ত এখন বাতিল করেছে লিগের টেকনিক্যাল কমিটি। এরপরই সংবাদ সম্মেলন ডাকে তামিম ইকবাল। এখন হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা ইস্যু কোথায় গিয়ে থাকে সেটাই দেখার বিষয়।