প্রকাশ: শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫, ১:০৫ PM
অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় গত একদিনে আরও অন্তত ৬০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক মানুষ। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এর ফলে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ৩৫০ জনেরও বেশি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে গাজায় ৬০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গভীর রাত ও শুক্রবার ভোরেও ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে, যার ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স ও চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলায় উত্তর গাজার জাবালিয়ায় একটি পরিবারের ১২ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।
এদিকে, পৃথক এক প্রতিবেদনে আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জানিয়েছে যে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে ইসরায়েলের চালানো ব্যাপক হামলায় উপত্যকায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১ হাজার ৩৫৫ জনে পৌঁছেছে। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় আহত আরও ১৫২ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এতে সংঘাত শুরুর পর থেকে মোট আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২৪৮ জনে। এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় পড়ে আছেন এবং উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে সামরিক অভিযান চলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। এরপর প্রায় দুই মাস গাজায় কমবেশি শান্তি বজায় ছিল। তবে, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে হামাসের সঙ্গে মতবিরোধের জের ধরে মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ইসরায়েল আবারও গাজায় বিমান হামলা শুরু করে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫ হাজার ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিও লঙ্ঘন করেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ভূখণ্ডটির প্রায় ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। এর আগে, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে অভিযানের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলারও মুখোমুখি হয়েছে।