শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
 
শিরোনাম:


উপদেষ্টাকে উপেক্ষা, অনশন চালিয়ে যাবার ঘোষণা কুয়েট শিক্ষার্থীদের
খুলনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:১৬ PM

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার এর কথা বলার পরও কোনো সমাধান হয়নি। প্রায় আধা ঘণ্টা উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় উপদেষ্টা দাবি আদায়ে অনড় অনশনরত শিক্ষার্থীদের সামনে বসে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কীভাবে ছয় দফা থেকে উপাচার্য পদত্যাগের এক দফা দাবি পরিণত হলো, সেই বিষয়টি শিক্ষার্থীরা জানান। তারা উপাচার্যের অপসারণ ছাড়া কোনোভাবেই অনশন কর্মসূচি থেকে সরে আসবেন না বলেও উপদেষ্টাকে জানান।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, পরিস্থিতি এ পর্যায়ে এসে গেছে। ছাত্রদের অনশন করতে হচ্ছে। তারা চাচ্ছে আমরা এখনই কোনো ঘোষণা দেই। যার মাধ্যমে তারা অনশন ভঙ্গ করতে পারে। আমি তাদের বোঝাতে চেষ্টা করেছি আইনি কিছু বিষয় রয়েছে। আমরা যাই করি না, সেটা আইন দ্বারা নির্দিষ্ট হতে হবে। আমার ধারণা, আমি কিছুটা হলেও তাদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছি। আমি এখানে একজন পিতা হিসেবে এসেছি আমি তাদেরকে বলেছি যারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে তারা যেনো পানি পান করে। আর যারা সুস্থ আছে তারা অনশন পালন করুক। কিন্তু তারা সেটা শুনেনি আমি তারপরও তাদেরকে অনুরোধ করছি, তারা যেন অনশন ভাঙে। আমি আশা করছি, যত দ্রুত সম্ভব তাদের এই সমস্যা সমাধান হবে। কুয়েটের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে সিন্ডিকেটের কয়েকজন সদস্য তাদের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানালে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আমি এসেছি শুধুমাত্র ছাত্রদের অনশন ভাঙাতে, অন্য কারো সঙ্গে এখন কোনো কথা নয়। শিক্ষার্থীরা বলেন, ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের অনশন চালিয়ে যাবেন।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত কুয়েট ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের একদফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে ইতোমধ্যে ৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৩টা থেকে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার চত্বরে তারা এ অনশনে বসেন। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রোকেয়া হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেছেন ছাত্রীরা। এ সময় ছাত্র হলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের তালা ভাঙতে সহায়তা করেন। অপরদিকে, কুয়েটের চলমান আন্দোলনের বিষয়টি বর্তমানে টক অব দ্যা কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। সারাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুধবার (২৩ এপ্রিল) ক্লাস বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাত সোয়া ১২টায় ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ। এ সময় বুয়েট, জবি, চুয়েট, কুয়েট, ঢাকা কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে খুলনা নাগরিক সংগঠন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইনকিলাব মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠন। মঙ্গলবার নিজেদের ফেসবুকে পেজে তারা এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এদিকে, বুধবার সকাল থেকে কুয়েটের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ক্যাম্পাসের ফটকগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। অনশন থেকে প্রত্যাহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষকরা। মঙ্গলবার সারাদিন কয়েক বার কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তারসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানান। উপ-উপাচার্য অনশনস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অনড় রয়েছেন।

এর আগে ১৪ এপ্রিল (সোমবার) রাতে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারির সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকা শিক্ষা কার্যক্রম আগামী ৪ মে এবং আবাসিক হলগুলো ২ মে খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। গত দুই দিন ধরে তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছিলেন। শিক্ষার্থীরা ১৫ এপ্রিল (মঙ্গলবার) দুপুরে নিজেরাই একের পর এক হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন। উল্লেখ্য, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩ এপ্রিল (রোববার) বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এর পর থেকে তারা ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। 







আরও খবর


 সর্বশেষ সংবাদ

সুইপার শুন্য থাকায় কুড়িগ্রামের আড়াই শ' শয্যার জেনারেল হাসপাতাল যেন নিজেই রোগী
পাহাড় খেকোদের তান্ডব নিলায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে আজ শেরপুরের গারো পাহাড়
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় জিএসটি গুচ্ছ ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
শেরপুরে নিখোঁজের দু'দিন পর এক নারীর মরদেহ উদ্ধার
কুলাউড়ায় সাংবাদিক সিপনের সুস্থতায় দোয়া অনুষ্ঠিত
আরো খবর ⇒


 সর্বাধিক পঠিত

মঞ্চে তাড়ুয়ার ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’
ভাঙাচোরা সড়কে সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগ
ফরিদপুরের সালথায় আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ্য কর্মীদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান
ইসরাইলি পণ্য বয়কট তালিকায় ভুল প্রচারে ক্ষতিগ্রস্ত দেশীয় শিল্প, ঝিনাইগাতীতে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
নেপালে ‘বর্ষা সুন্দরী’র চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী
প্রকাশক: এম এন এইচ বুলু
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মাহফুজুর রহমান রিমন  |   উপদেষ্টা সম্পাদক : রাজু আলীম  
বিএনএস সংবাদ প্রতিদিন লি. এর পক্ষে প্রকাশক এম এন এইচ বুলু কর্তৃক ৪০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বুলু ওশেন টাওয়ার, (১০তলা), বনানী, ঢাকা ১২১৩ থেকে প্রকাশিত ও শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ফোন:০২৯৮২০০১৯-২০ ফ্যাক্স: ০২-৯৮২০০১৬ ই-মেইল: spnewsdesh@gmail.com