প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫, ৬:০৬ PM
ভাত রান্না করে আগের রাতে ভিজিয়ে রাখা হয় পানিতে। সকালে পানি বদলালেই হয়ে যায় পান্তা ভাত। এর সঙ্গে কাঁচা কিংবা শুকনো মরিচ, পেঁয়াজ আর ডালের বড়া কিংবা ডিম ভাজি। কখনো কখনো সঙ্গী হরেকরকম ভর্তা। ব্যাস, পেট পুরে ভাত খেতে আর কী চাই। গরমকালে পান্তাভাতের আবেদন বেড়ে যায় বহুগুণ। এই ভাত যেমন সুস্বাদু, তেমনি উপকারিও বটে। এখনও অনেক পরিবারে সকালের নাশতা হিসেবে পান্তা ভাত খাওয়ার চল রয়েছে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি, সাধারণ ভাতের তুলনায় অনেক ক্ষেত্রেই বেশি ভেজা বাসি ভাত মানে পান্তাভাত বেশি কার্যকরী।
১০০ গ্রাম টাটকা ভাতে লৌহ খনিজের পরিমাণ মাত্র ৩.৪ মিলিগ্রাম। কিন্তু সমপরিমাণ ভাত যদি বারো ঘণ্টার জন্য ভেজানো থাকে, তাহলে তাতে লৌহ খনিজের পরিমাণ পৌঁছাবে ৭৩.৯১ মিলিগ্রামে।
পান্তা ভাতের উপকারিতা
পরিপাক ক্রিয়া উন্নত করে পান্তা ভাত। তীব্র গরমে শরীরের জন্য এটি উপাদেয় ও উপকারী। গরমে ডায়রিয়া ও হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিয়মিত পান্তাভাত খাওয়া উচিত।
কিন্তু পান্তা ভাত কি সবাই খেতে পারেন? বিশেষ করে যাদের হাই ব্লাড সুগার রয়েছে। নাকি পান্তা খেলে বেড়ে যাবে ডায়াবেটিস?
ডায়াবেটিস রোগীরা কি পান্তা ভাত খেতে পারে?
টাইপ টু ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় স্থূলতা। তলপেটের অতিরিক্ত মেদের জন্য কোষে কোষে বেড়ে যায় ইনসুলিন রেজিস্টান্স। এই সমস্যা রোধ করে পান্তা ভাতের প্রোবায়োটিক বৈশিষ্ট্য।
পান্তা ভাতের প্রোবায়োটিকের প্রভাবে শরীরে ফ্যাট সঞ্চয়ের প্রবণতা কমে যায়। একইসঙ্গে কমে স্থূলতা এবং টাইপ টু ডায়াবেটিসের আশঙ্কাও। পান্তা ভাতের প্রোবায়োটিক রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়। যা ডায়াবেটিসে সংক্রমণের হার কমায়। আবার সংক্রমণ হলে সুস্থতার হার বাড়িয়ে তোলে পান্তা ভাত।
এখানেই শেষ নয়। পান্তা ভাত খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। ফলে হৃদরোগের আশঙ্কাও কমে। পানিতে ভেজানো ভাতে অ্যান্টি ডায়াবেটিক উপাদানগুলোর কার্যকারিতাও বৃদ্ধি পায় অনেকটাই। এর প্রোবায়োটিকের গুণে নানা ভিটামিনের সংশ্লেষ বাড়ে। ফলে শরীরে ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়।
তবে ভাতের মতোই পান্তা ভাতেও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোড বেশি। তাই এটি বেশি পরিমাণ খাবেন না। ডায়াবেটিস রোগীর থালার চার ভাগের এক ভাগ হবে পান্তা ভাত। বাকিটায় থাকবে ডাল, তরকারি ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার। এভাবে পান্তা ভাত খেলে গরমে সুস্থ থাকবে শরীর, নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিসও।