প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ৭:০২ PM
পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে গাজীপুর কালীগঞ্জে বিনিরাইলে আয়োজিত ঐতিহ্যবাহী "জামাই মেলা" এলাকাবাসীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসবে পরিণত হয়েছে। শত বছরের এই মেলা স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের পরিচায়ক।
এই মেলা "মাছের মেলা" নামেও পরিচিত। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে বিরল ও বড় আকারের মাছ ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য আসে। মেলার মূল আকর্ষণ জামাইদের জন্য বড় মাছ কেনা। এ কারণেই এটি "জামাই মেলা" নামে বেশি পরিচিত। মেলার ইতিহাস অনুযায়ী, এটি বিনিরাইল গ্রামের শেষ প্রান্তে শুরু হয়। মেলার পাশেই হিজল গাছের নিচে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা-অর্চনা অনুষ্ঠিত হতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেলার স্থান পরিবর্তিত হয়ে বর্তমানে এটি বিনিরাইল গ্রামের শেষ প্রান্তে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে এখনও হিজল গাছের নিচে পূজা-অর্চনার ঐতিহ্য রক্ষিত আছে।
মেলায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে বিশেষ এক উৎসাহ দেখা যায়। বড় আকারের মাছ দেখতে ও কিনতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে। এসব মাছ সাধারণত হাট-বাজারে খুব কমই দেখা যায়। মেলার সময় এলাকার প্রতিটি বাড়িতে মেহমানরা আসেন, যা আত্মীয়তার সম্পর্ক আরও দৃঢ় করে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, "এই মেলা আমাদের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির একটি বড় অংশ। এখানে শুধু কেনা-বেচা নয়, আত্মীয়-স্বজন ও প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ তৈরি হয়।" মেলা সুন্দরভাবে আয়োজনের জন্য স্থানীয় প্রশাসন এবং এলাকাবাসী যৌথভাবে কাজ করে। তাদের প্রচেষ্টায় মেলার পরিবেশ সুশৃঙ্খল থাকে। জামাই মেলা শুধু একটি সাংস্কৃতিক আয়োজন নয়, এটি গ্রামের মানুষের জীবনে এক বিশেষ আনন্দের উৎস। এই ঐতিহ্যবাহী মেলা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে টিকে থাকুক—এটাই সবার কামনা।