বুধবার ১৫ মে ২০২৪ ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
 
শিরোনাম: নতুন বছরে অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ       ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা       একদিনে শনাক্ত আরও ৫১২ জন       দেশে আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত       সবার আগে বর্ষবরণ করলো নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া       শেষ সূর্যাস্ত দেখতে সৈকতে ভিড়       ২০২১ সালে ধর্ষণের শিকার অন্তত ১৩২১ নারী!      


উত্তাপ ছড়াবে রাজনীতি!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৮:৫৫ পিএম |

নতুন বছরে কয়েকটি ইস্যুতে উত্তাপ ছড়াতে পারে দেশের রাজনীতি। নির্বাচন কমিশন গঠন থেকে শুরু করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং আন্তর্জাতিক ভূতাত্ত্বিক পরিস্থিতি- এসব মিলিয়েই বছরজুড়ে রাজনীতির মাঠ গরম থাকবে বলে মনে করেন বিরোধী নানা দলের নেতারা। 

নতুন বছরের রাজনীতি কেমন হবে- এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ অন্তত ১০টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, করোনা সঙ্কট থেকে অর্থনীতি কিছুটা স্বাভাবিকের দিকে গেলেও নতুন করে সংক্রমণ বাড়লে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু ও আন্তর্জাতিক-ভূরাজনৈতিক কৌশলগত দিক থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন কিছুর দেখা মিলতে পারে।  

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও দলটির জোটসঙ্গী নেতাদের ভাষ্য, করোনার প্রভাবে যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, সরকার সেসব পূরণ করতে পারলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে। 

এ ছাড়া ক্ষোভ-বিক্ষোভের জায়গা তৈরি হতে পারে, তবে সঙ্কট প্রকট হবে না- এমনটাই আশাবাদ সরকারপন্থী নেতাদের। আন্দোলনের নামে সহিংসতার সৃষ্টি হলে রাজনৈতিকভাবে সেটার মোকাবিলা করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। অপরদিকে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর নেতারা বলছেন, নতুন বছরে রাজনীতির মূল ইস্যু হবে সবার অংশগ্রহণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান পদ্ধতি নিশ্চিত করা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর কিংবা ২০২৪-এর জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিরোধীদের বোঝাপড়া জোরদার হবে নতুন বছরেই। এ কারণে দেখা দিতে পারে নতুন মেরুকরণ। তৈরি হতে পারে নতুন রাজনৈতিক ঐক্য। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যে পথে হাঁটছে, তাতে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ছাড়া উপায় থাকবে না।’ অপরদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হওয়ার কিছু দেখছি না। 

নিয়মতান্ত্রিকভাবে কেউ রাজনীতি করলে মাঠ উত্তপ্ত হবে কেন? তারা যদি মাঠ গরমের নামে অতীতের মতো চোরাগোপ্তা হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের চেষ্টা করে তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। জনগণকে তারা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলে আমরা জনগণকে সচেতন করবো।’ ফারুক খান আরও বলেন, ‘বিএনপি রাজনীতির মাঠে নেমেছে, এটা ভালো লক্ষণ। তবে তারা যে কারণে মাঠে নেমেছে সেটা ভুল রাজনীতি। খালেদা জিয়া দেশের প্রচলিত আইনে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজা পেয়েছেন। এই রাজনীতি নিয়ে মাঠে নামলে বিএনপি জনসমর্থন পাবে না’। দয়া ভিক্ষা চাওয়া কোনও রাজনীতি নয়, বরং ক্ষমতায় গেলে তারা কী করবেন; সেই ইস্যু নিয়ে মাঠে নামলে ভালো করবেন বলেও পরামর্শ এই আওয়ামী লীগ নেতার। তিনি বলেন, ‘অন্ধকার রাস্তা দিয়ে ক্ষমতায় আসার চিন্তা বাদ দিয়ে নির্বাচনের পথে এলেই তারা জনসমর্থন পেতে পারে।’

আর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু মনে করেন, নতুন বছরে অনেক নতুনের সঙ্গে পরিচয় হতে পারে। আবার অনেক কিছু কেড়েও নিতে পারে। তিনি বলেন, ‘ওমিক্রন নিয়ে বড় শঙ্কা রয়েছে। তবে দেশি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে প্রত্যাশিত কিছু দেখা যেতে পারে। সরকার তার আগের অবস্থান থেকে সরে আসতে পারে।’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার ধারণা, নতুন বছরে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ কিছু ঘটতে পারে। তিনি বলেন, ‘কিছু সময় ধরে ভূ-রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এর প্রভাব যেমন রাজনীতিতে পড়বে, তেমনি সেটা আরও বিস্তৃত হয় কিনা, সেটাও লক্ষ্যণীয়।’ তবে ‘সহসাই এসব নিয়ে মন্তব্য করার সুযোগ নেই’ বলে মনে করেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘যারা কান পেতে রাখেন তারা হয়তো কিছুটা বুঝতে পারছেন।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে বড় করে দেখছেন না বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তার ব্যাখ্যা, ‘এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ মিয়ানমার, ইরানেও তারা করেছে। সেসব দেশ তো ভালোভাবেই চলছে।’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা আশা করি নতুন বছরে রাজনীতিতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকবে। যদিও কোনও কোনও দল নীতিগতভাবে মাঠ উত্তপ্ত করার চেষ্টা করবে। তবে সামগ্রিক পরিস্থিতিতে আমার বিশ্বাস- বিরোধীরা সে অর্থে সফল হবে না।’ বিএনপি যদি রাজপথে সক্রিয় হয়, সে ক্ষেত্রে নতুন বছরের রাজনীতিতে প্রভাব কেমন পড়বে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ এটা ধরে রাখা বিএনপির পক্ষে কঠিন। সমস্ত জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার কৌশল তারা সেভাবে রপ্ত করতে পারেনি।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘নতুন বছরের রাজনীতি হবে আন্দোলন-সংগ্রামের রাজনীতি। বাংলাদেশ যে সঙ্কটের মধ্যে আছে, বর্তমান শাসনব্যবস্থা অব্যাহত থাকলে এই সঙ্কট আরও বিদপজ্জনক জায়গায় পৌঁছাবে। এই জায়গা থেকে মুক্তির পথ হচ্ছে সরকার পতনের আন্দোলন।’

নতুন বছরের রাজনীতিতে টার্নিং পয়েন্ট সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মনজু। তিনি বলেন, ‘নতুন বছরে নির্বাচন কমিশন গঠন ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রচেষ্টা থাকবে। আন্তর্জাতিকভাবে ঢাকাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের ভূতাত্ত্বিক কৌশলও পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা আনতে পারে।’







আরও খবর


প্রকাশক: এম এন এইচ বুলু
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মাহফুজুর রহমান রিমন  |   উপদেষ্টা সম্পাদক : রাজু আলীম  
বিএনএস সংবাদ প্রতিদিন লি. এর পক্ষে প্রকাশক এম এন এইচ বুলু কর্তৃক ৪০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বুলু ওশেন টাওয়ার, (১০তলা), বনানী, ঢাকা ১২১৩ থেকে প্রকাশিত ও শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ফোন:০২৯৮২০০১৯-২০ ফ্যাক্স: ০২-৯৮২০০১৬ ই-মেইল: spnewsdesh@gmail.com