প্রকাশ: রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৭:২৮ PM
গাজীপুর শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘটছে যাত্রীদের তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা। অপহরণে শিকার ব্যক্তিদের প্রাইভেট কার বা মাইক্রোতে তুলে হাত-মুখ বেঁধে নির্যাতন করা হয়। বনজঙ্গলে ঘুরে আদায় করা হয় মুক্তি পণ। পরে অপহৃতকে ফেলে পালিয়ে যায় অপহরণ কারীরা। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে অপহরণের শিকার হন মাছ ব্যবসায়ী মো. সেলিম মিয়া (৩২)। অপহরণ কারীরা সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তাকে মাওনা উড়াল সেতুর দক্ষিন পাশের মোহা সিএনজি পাম্পের সামনে থেকে প্রাইভেট কারে তুলে অপহরণ করে। তাকে গভীর রাত পর্যন্ত গাড়িতে রেখে নির্যাতন করে দেড়লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। পরে তাকে জিম্মিকরে একলাখ বিয়াল্লিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা এলাকায় ফেলে যায়। অপহৃত সেলিম মিয়া উপজেলার পৌরসভার দারগার চালা গ্রামের মৃত তাহের আলীর ছেলে। তিনি মাওনাতে মাছের ব্যবসা করেন।
ভিকটিম ও পুলিশ সূত্রে জানাযায়, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সেলিম ব্যবসায়ীকাজে ঢাকা যেতে মহাসড়কে গাড়ীর জন্য অপেক্ষ করছিলেন। এসময় অজ্ঞাত প্রাইভেট কার চালক বলেন তিনি ঢাকা যাবেন। গাড়িতে আরো তিন যাত্রী আছে। একশ টাকা দিলে সেলিমকেও ঢাকায় নিয়ে যাবেন। সরল বিশ্বাসে সেলিম গাড়িতে উঠে। দুই নং সিএনবি বাজারের কাছে পৌছেই যাত্রী বেশী অপহরণ কারীরা কাপড় দিয়ে সেলিমের মুখ,হাত,পা বেঁধে ফেলে। গলায় ছুড়ি ধরে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে তার মোবাইল থেকে বড় ভাই মোহাম্মদ আলীর নিকট ফোন করে দেড়লাখ টাকা মুক্তি পণ দাবী করে।
দর কষাকষির এক পর্যায়ে বিকাশে ৯৫হাজার টাকা এবং সেলিমের নিকট থাকা ৪৭হাজার টাকা সহ এক লাখ বিয়াল্লিশ হাজার টাকা আদায় করে চক্রটি। পরে সেলিমকে বাস ভাড়ার জন্য দুইশ টাকা এবং মোবাইল ফেরত দিয়ে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তার পাশে ফেলে যায়। সেলিম তাৎক্ষনিক স্বজনদের ঘটনা মোবাইলে জানায়। এলাকাবাসী রাজেন্দ্রপুর এক্স হোটেলের সামনে থেকে অপহরণ কারীদের ব্যবহৃত প্রাইভেট কার নং ঢাকা মেট্রো গ ১৪-৬৮৯৯ আটক করে। এ সময় ছিন্তাইকারীরা অন্য একটি প্রাইভেট কার নিয়ে এসে ওই প্রাইভেট কারটি নিয়ে যেতে চেষ্টাকরে। সেলিমের স্বজনদের বাধার মুখে অপহরণ কারীরা প্রাইভেট কার নং ঢাকা মেট্রো গ ১৫-৭০৪২ ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা প্রাইভেট কার দু’টি অঅটক করে থানায় সোপর্দকরে। এর আগে গত ১২সেপ্টেম্বর রাতে মাওনা চৌরাস্তায় ত্রিশলা যাওয়ার জন্য বাসের অপক্ষোয় ছিলেন মাদরাসা শিক্ষক মো. আ.মজিদ। একই কায়দায় একটি প্রাইভেট কার তাকে ত্রিশাল পৌছে দেবার কথা বলে গাড়িতে উঠায়। পরে তার চোখ,মুখ,হাত,গা বেধে নির্যাতন করে তিন লাখ টাকা মুক্তি পণ দাবী করে। পরে দর কষাকষি করে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি মেলে ওই শিক্ষকের। তাকে অপহরণ কারীরা রাজেন্দ্রপুরের পাশে বাংলাবাজার এলাকায় জঙ্গলের ভেতর ফেলে যায়।
স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায়সই যাত্রীদের প্রাইভেট কার,মাইক্রো বাস বা মিনি বাসে তুল যাত্রীবেশী অপহরণ কারীরা মুক্তি পণ আদায় করে থাকে। এ বিষয়ে তারা হাইওয়ে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মুরশেদ সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন, "মহাসড়কের আইন শৃংখলার দায়ীত্ব থানা পুলিশের। এ বিষয়ে থানা পুলিশ ব্যবস্থা নিবে। হাইওয়ে পুলিশ শুধু দূর্ঘটনা বিষয় দেখে থাকে।" শ্রীপুর থানর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মো.জয়নাল আবেদীন মন্ডল সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন , "মহাসড়কে অপহরণের ঘটনায় দুটি প্রাইভেট কার জনতা আটক করেছে। এ বিষয়ে মামলা প্রকৃয়াধিন আছে।"