প্রকাশ: শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৯:০০ PM
বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশের কাছে বকেয়া থাকলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখবে ভারতীয় শিল্প গোষ্ঠী আদানি পাওয়ার।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) দেশটির আর্থিক ও ব্যবসা বিষয়ক সংবাদমাধ্যম মানিকন্ট্রোল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
আদানি গ্রুপের একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, দ্রুত বকেয়া পরিশোধের জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আমরা বাংলাদেশকে জানিয়েছি বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরিতে অর্থলগ্নিকারীদের চাপে আছে আদানি গ্রুপ। এছাড়া আদানি গ্রুপ আশা প্রকাশ করেছে বিলম্বের সুদসহ সব বকেয়া দ্রুত পরিশোধ করা হবে।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে ঝারখণ্ডে তৈরি করা আদানির ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ আদানি গ্রুপকে ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার দিতে হয় বাংলাদেশকে। তবে সময়মতো অর্থ পরিশোধ না করায় বকেয়া ৮০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার সমান। ২০১৭ সালে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ২৫ বছরের চুক্তি করে বিপিডিসি। চুক্তি অনুযায়ী, গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশ ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নেবে, যা পিক পাওয়ার ডিমান্ডে বাংলাদেশে মোট চাহিদার ১০ শতাংশ। ২ বিলিয়ন ডলার খরচ করে তৈরি করা আদানির গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব বিদ্যুতই বাংলাদেশে আসে।
২০২৩ সালে জুনে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় এবং ওই মাস থেকেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে তারা। বিদ্যুৎ সরবরাহ ছাড়াও বাংলাদেশে আদানির ভোজ্যতেল পরিশোধনাগার এবং চাল প্রক্রিয়াজাতকরণ প্ল্যান্ট রয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, আদানি গ্রুপকে বিদ্যুৎ সরবরাহের পাওনা মার্কিন ডলারে অর্থ পরিশোধ করে বাংলাদেশ। কিন্তু গত ২৩ আগস্ট মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানায়, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ২০ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যেটি দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে আরও ঋণ পাওয়ার চেষ্টা করছে বলে মানিকন্ট্রোলের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ইতোমধ্যে আইএমএফ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ।
এর আগে, সম্প্রতি ভারত সরকার তাদের বিদ্যুৎ নীতিতে পরিবর্তন আনে। নতুন নীতিমালা অনুসারে, যেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধুমাত্র বিদেশে বিদ্যুৎ রফতানি করতে তৈরি করা হয়েছে তারা চাইলে স্থানীয় বাজারেও বিদ্যুৎ দিতে পারবে।