প্রকাশ: বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৮:২৯ PM
ফরিদপুরের সালথায় প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে ইয়ার আলী শেখ (৫০) নামে এক মুদি দোকানি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ঢাকা এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। নিহত ইয়ার আলী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের গোপালিয়া গ্রামের মৃত খবির উদ্দীন শেখের ছেলে। তিনি গোপালিয়া গ্রামে একটি মুদি দোকান চালাতেন।
এদিকে ইয়ার আলী শেখ নিহতের খবর এলাকায় পৌছলে নিহতের স্বজনেরা প্রতিবেশি ওমর আলী শেখের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। এরপর রাত ১০ টার দিকে মৃতদেহ এলাকায় পৌছলে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজায় স্থানীয় ও আশপাশের প্রায় ৫শতাধিক লোক অংশগ্রহণ করে। পরদিন সকালে (৪ সেপ্টেম্বর) নিহত ইয়ার আলীর স্বজন ও দল-পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের ১০/১২ টি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে। এর মধ্যে ছাকেন মাতু: হাফিজুর মাস্টার, ওহিদ সেখ ও রাজ্জাক মাতুব্বের বাড়ী রয়েছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আনুমানিক ১০ মাস আগে গোপালিয়া গ্রামের মফিজুরকে মারধর করেন ইয়ার আলী ও তার ছেলেরা। ইয়ার আলী স্থানীয়ভাবে আয়ুব আলী মাস্টারের দলের সমর্থক আর মফিজুর প্রতিপক্ষের হাফিজুর রহমান মাস্টারের আপন ভাই। ঘটনার পর থেকে উভয় দলের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এরই মধ্যে সরকার পতনের পর গত ১১ আগস্ট রাত ১০টার দিকে নিজ দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে ইয়ার আলীর উপর হামলা চালিয়ে গুরুত্বর আহত করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইয়ার আলী।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইয়ার আলীর ভাজিতা কামাল হুসাইন। তিনি বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে গত ১১ আগস্ট রাত ১০টার দিকে নিজ দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে ইয়ার আলীকে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে প্রতিপক্ষের হাফিজুর রহমান মাস্টার ও তার ভাই মফিজুর এবং সাকেন শেখসহ কয়েকজন। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সকালে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান ৭/৮ আগস্ট ২৪ইং তারিখ সন্ধ্যার পর মোঃ ইয়ার আলি তার লোকজন নিয়ে মোঃ আতা,বাদশা ও ইকতারের বাড়ি লুটপাট করে ফেরার পথে দোকানে কাছে এলে বিরুদ্ধ দলের লোকজন সাথে মারামারিতে লিপ্ত হয় তখন ইয়ার আলি ধরা খেয়ে যায় এবং আহত হলে পরে হাসপাতালে ভর্তি হয়। তিনি আরো জানান এ সকল কর্মকান্ড যুবলীগ নেতা ফরহাদ মোল্লার ইন্দনে ঘটছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকতে তারা অনেক প্রভাব খাটিয়েছে। বর্তমানে নিহতের প্রতিপক্ষের শিশু মহিলাসহ সবাই চরম নিরাপত্তাহীনতায় সময় পার করছে। কেউ আবার বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল বৃদ্ধির অনুরোধ করেন তিনি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান (পিপিএম) বলেন, ইয়ার আলীর ওপর হামলার ঘটনায় গত ১৪ আগষ্ট একটি মামলা হয়েছিল। ওই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তিত করার জন্য বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করা হয়েছে। হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে। তাছাড়া ভাংচুর ও লুটপাট বন্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।