প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৮:০৭ PM
অনিয়ম দুর্নীতির নানা অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত আবেদন করেছেন শিক্ষার্থীর অবিভাবকেরা। মহানগরীর ৪১নং ওয়ার্ডে অবস্থিত পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুবি আক্তারের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ মঙ্গলবার দুপুরে অভিযোগ পত্রটি জমা দিয়েছেন একই স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক ফেরদৌস বেপারি। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুবি আক্তার গার্হস্থ্য বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পান। পরে দলীয়, আঞ্চলিক ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিতে আত্মীয়দের আনুকূল্যে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। নামমাত্র নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদের পাশ কাটিয়ে তাকে এই পদে বসানো হয়। বিধিবহির্ভূত পন্থায় তাকে পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন পন্থায় স্কুলের অর্থ আত্মসাৎ করতে থাকেন।অভিযোগ উঠে স্কুলের নামে একটি সরকারি পুকুর ছিল। দূর্নীতি করে পুকুরের আয়ের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই পুকুরের মাছ রাতের আঁধারে বিক্রি করে স্কুলের ফান্ডে টাকা জমা না দিয়া ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজসে আত্মসাৎ করেছেন। মাছ বিক্রির টাকার কোন প্রমাণ রাখেন নাই। এছাড়াও অভিযোগ উঠে স্কুলের পুরনো খাতা, বই বিক্রির কোন রশিদ না রেখে মনগড়া আয় দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এই প্রধান শিক্ষক । অভিযোগে আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক স্কুলের নতুন বিল্ডিং এর মাটি বিক্রি করেও লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পুরাতন বিল্ডিংয়ের পুরানো ইট, রড ও টিন বিক্রির কোন রশিদ না রেখে মনগড়া আয় দেখিয়েও লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। নিয়োগ বাণিজ্য, কোচিং বাণিজ্য সহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এমন কি সাধারণ একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী (আয়া) থেকে দুই লক্ষ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধেে। তার পছন্দ মত স্কুল পরিচালনা কমিটির সাথে মিলে অযোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে তার উকিল জামাই কোচিং বাণিজ্যের হোতা ইউনুস মিয়া ও কথিত ডান হাত মোঃ ওয়াসিম মিয়া জড়িত আছেন। মোঃ ওয়াসিম প্রায়শই ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করছেন বলে একাধিকবার অভিযোগ উঠে। এইনখন্ডকালীন শিক্ষক ছাত্রীদের আপত্তিজনক স্থানে হাত দিলে সংশ্লিষ্ট ছাত্রী ও তাদের অভিভাবক অভিযোগ জানান। কিন্তু তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার ও অসন্মানজনক আচরণ করেন প্রধান শিক্ষিকারব ওই সিন্ডিকেট।
তাছাড়া স্কুলের হিসাবে সোনালি ব্যাংকে থাকা টাকা কমিটির দাতা সদস্য ও নিজের ব্যবসা বাণিজ্যে খাটিয়েছেন। তার প্রমাণ একাউন্ট অনুসন্ধান করলে পাওয়া যাবে বলি দাবি করেছেন আবেদননকারী।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, বিগত চার বছর যাবত ওই স্কুলে নির্বাচিত কোন পরিচালনা কমিটি নেই বা হতে দেওয়া হয় নাই। বিগত দুই বছর যাবত কোন প্রকার খেলা-ধুলা বা বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় নাই।এসব অনিয়মের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক আয়ের একটি অবৈধ উৎস সৃষ্টি করেছেন। বিধিবহির্ভূত পন্থায় গড়েছেন অঢেল সম্পদ। ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি ও স্কুলের একাডেমিক শিক্ষার মান তলানিতে গেলে গত ২৫ আগস্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ ও অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহল। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এদিকে গত ২৫ তারিখ থেকে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক সহ অভিযুক্তরা অদ্যাবধি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার মো: শাজাহান জানান, অভিযোগটি হাতে পেয়েছি। গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। তদন্ত কমিটি করে কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।