প্রকাশ: শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৩:০৪ PM
ভিয়েতনামে টাইফুন ইয়াগির আঘাত এবং তার জেরে সৃষ্ট ঝোড়ো হাওয়া- প্রবল বর্ষণ-বন্যা ও ভূমিধসে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রয়টার্স শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থা জানিয়েছে, এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগে ৮২০ জনেরও বেশি মানুষ আহত ও ৮২ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। বন্যার পানি কমে যাওয়ার পর তল্লাশি ও উদ্ধারকাজ জোরদার করা হয়েছে। চলতি বছরে এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন ইয়াগি গত শনিবার ভিয়েতনামের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় উপকূল দিয়ে স্থলে ওঠে আসে। এরপর এক সপ্তাহ পার হলেও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটি এখনো ইয়াগির প্রভাবমুক্ত হয়নি।
দেশটির প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে আকস্মিক বন্যায় উত্তরাঞ্চলীয় পার্বত্য প্রদেশ লাও কাইয়ের নু গ্রামের ৩৭টি বাড়ি ভেসে গেছে। তারপর থেকে সেখানের ৪১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। কর্তৃপক্ষ তাদের এখনো খুঁজে বেড়াচ্ছে। এ ঘটনায় গ্রামটির ৪৬ জন বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। লাও কাইয়ের আরেকটি গ্রামের ১১৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে এর আগে জানানো হলেও তারা নিরাপদে ফিরে এসেছেন। দুর্যোগের মধ্যে তারা পর্বতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন আর সেখানে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না।
সংবাদ এজেন্সি জানিয়েছে, তাদের গ্রামটি ভূমিধসের হুমকির মুখে থাকায় গ্রামবাসীরা পর্বতে বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী আশ্রয় তৈরি করে সেখানে সরে গিয়েছিলেন। গ্রাম প্রধান ভাং সেও চু বলেছেন, ‘আমরা আমাদের সঙ্গে শুধু কিছু ভাত ও খাবার আনতে পেরেছিলাম, সেগুলো ফুরিয়ে যাওয়ার পর আমরা কচি বাঁশের কাণ্ড খেয়ে থেকেছি।’
জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলের লাখ লাখ শিশু তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে। তারা বিশুদ্ধ পানি, পয়ঃনিষ্কাশনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না। স্কুলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আর সেগুলোর বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় প্রায় ২০ লাখ শিশুর পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, রাজধানী হ্যানয়ের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া লোহিত নদীর পানি কমা অব্যাহত আছে আর কিছু সেতুতে ফের গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, টাইফুন, বন্যা ও ভূমিধসে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির কারণে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভিয়েতনামের ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর কাছে ২৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের সমপরিমাণ ইন্স্যুরেন্স দাবি জমা পড়েছে।